পীরগঞ্জের ৩ শিশু সন্তানের আর্তনাদ আর কত কষ্ট করমো,হামাক এনা খাবার ব্যবস্থা করি দেও !
মোস্তফা মিয়া,পীরগঞ্জ(রংপুর) থেকে:
আব্বা মা কোন দিন আসবে ? খায়া না থায়া দিন যাওচে ।আর কত কষ্ট করমো ।হামাক এনা খাবার ব্যাবস্থা করি দেও।এ আর্তনাদ রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বড়দরগাহ ইউনিয়নের গুর্জিপাড়া গ্রামের ৩ শিশু সন্তানের । বিগত ৩ মাস থেকে পিতা মাতার ছেন্হে থেকে বঞ্চিত হেতু অনাদর অবহেলা,অনাহার ও অর্ধাহারে কাটছে ওদের জীবন । ওদের কাছে জীবনটা যেন হয়ে উঠেছে শুধুই কষ্টের ।অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে ওদের ভবিষ্যতও ।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, উপজেলার গুর্জিপাড়া গ্রামের মৃত্যু ছামাদ মিয়ার পুত্র মিরু মিয়া নিতান্তই একটি দরিদ্র পরিবারের গৃহকর্তা । তার ঘরে রয়েছে ৩ শিশু সন্তান সাকিল (১৩),মেঘলা (১০) সাকিব (৭) । এদিকে চলতি সনের গত ২৫ জানুয়ারী মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর রংপুর এর পরিদর্শক নজরুল ইসলাম এর দায়েরকৃত পৃথক ২টি মামলায় মিরু মিয়া (৩৫) ও তার স্ত্রী শাপলা বেগম (২৮)কে গ্রেফতার হয়।
পীরগঞ্জ থানার মামলা নং-২৯/২৯ ও ৩০/৩০। গ্রেফতারের পর থেকে তারা জেল হাজতে রয়েছে ।গ্রেফতারের পর থেকে পিতামাতা জেল হাজতে থাকায় অসহায় হয়ে পড়েছে এ ৩ শিশু সন্তান । অনেকের কাছে প্রতিনিয়ত ওদের প্রশ্ন, বাবা মা কখন আসবে জানেন ? চোখের জল ব্যাতিরেকে একটি দিন কিংবা রাত কাটছে না ওদের।ওরা তো শিশু ,রোজগারের উপায় ওদের অজানা ।জীবিকার জন্য ওরা পুরোটাই অন্যের উপর নির্ভরশীল ।যেখানেই যায় একত্রে । কেউ যখন কাঁদে অন্য ২জন শান্তনা দেন। কখনও বা কান্না চলে একত্রে ।ওদের কান্নায় প্রতিবেশীরা অনেকে শান্তনা দেন ।সহায়তা দেন কিছু খাবারের । কিন্ত এ ভাবে কত দিন ? অন্যের সামান্যতম খাবার দিয়ে ওদের পেট ভরে না । তুবুও ৩ জনে ভাগাভাগী করে খায় । যখন ওদের প্রচন্ড খিদে পায় তখন হয়তো কারো কাছে চেয়ে নেয় সামন্যতম খাবার । আর এ ভাবেই চলছে ওদের জীবন ।একটি মাত্র জরাজীর্ণ ঘরে ও যৌথ ভাবেও থাকতে পারেনা । তাই দরিদ্র বৃদ্ধা নানী ওদের সঙ্গে বসবাস করছে।ওদেরকে শান্তনা দিয়ে রাখার চেষ্টা করছে । কিন্তু ওদের বড় সমস্যা খাদ্যাভাব । পেট ভরে খেতে পারলে বর্তমান অভিভাবক হীন ওরা ৩ ভাই বোনের দুঃখ কষ্ট কিছুটা লাঘব হত বলে গ্রামবাসী মনে করছেন ।একই প্রত্যাশা ৩ শিশু সন্তানেরও । ওরা জানে না কবে এ কষ্টকর পরিস্থিতির অবসান হবে ? সমাজের অন্য শিশুদের ন্যায় পেট ভরে খেতে পারবে ও স্বাভাবিক জীবনের পাবে নিশ্চয়তা !